আত্রাই দমদমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ১৫ জন ॥ শিক্ষক ৬ জন
আত্রাই দমদমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
আত্রাই (নওগাঁ) থেকে মো. কাজী রহমান
আত্রাই উপজেলার দমদমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। এই ১৫ জন শিক্ষার্থীর পড়ালেখায় রয়েছেন ছয় জন শিক্ষক। কাগজে-কলমে মোট ৬৮ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে এর হদিস মেলেনি। অভিযোগ ওঠেছে বিদ্যালয়ের দুই এক জন শিক্ষকের কারণে শিশুদের ভর্তি করান না অভিভাবকরা। ফলে শিক্ষার্থী শূন্য হতে চলেছে বিদ্যালয়টিতে।
জানাগেছে, দমদমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গত ১৯৯১ সালে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্থাপতি হয়েছে। এর পর সরকারের ঘোষণা অনুয়ায়ী গত ২০১৩ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিদ্যালয়ে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী এবং নানা দুর্ভোগের কথা জানতে পেরে গত সোমবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণীতে ৬ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৫ জন এবং পঞ্চম শ্রেণীতে ৪ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত আছে। এবং প্রাক-প্রাথমিক কক্ষে যেখানে কোমলমতি শিশুদের জন্য সাজানো গোছানো মনোরম পরিবেশ থাকার কথা সেখানে রয়েছে বাচ্চা ঘুমানোর ব্যবস্থা। স্কুলে মুজিব কর্ণার ও শেখ রাসেল কর্ণার আছে কি না জানে না কোনো শিক্ষার্থী। নেই শিশুদের খেলাধুলার জন্য সরঞ্জামও। তবে শিক্ষার্থী কম থাকলেও কম নেই শিক্ষকের সংখ্যা। অনেক বিদ্যালয় যেখানে শিক্ষকের অভাবে সুষ্ঠু পাঠদান করাতে পারছেন না, সেখানে এমন কম সংখ্যক শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক পাঠদান করাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মুজিব কর্ণার কি জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে আমরাতো সেটা কখনো দেখিনি! স্যারতো আমাদেরকে বলেনি কোনটা মুজিব কর্ণার। ওই এলাকার নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, এই বিদ্যালয়ে তেমন পড়ালেখা হয় না। দুইজন শিক্ষকের কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আমরা শিশুদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিয়েছি। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা নারগিস বেগম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আমরা তাই গ্রামের মানুষেরা আমার বিরুদ্ধে অনেক কিছু বলে থাকে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আশপাশে অনেক মাদ্রাসা গড়ে ওঠার কারণে অভিভাবকরা মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিয়েছেন। এছাড়া এছাড়া এলাকায় খেত থেকে আলু উত্তোলন করার মৌসুম পড়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী আলু তোলার কাজে ব্যস্ত রয়েছে। ফলে উপস্থিতি কমে গেছে। অবশ্য এ বিষয়গুলো আমাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অবগত আছেন বলে দাবি করেন তিনি।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজিজুল হক বলেন, এই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনেক কম। ‘তবে স্কুলের দুই একজন শিক্ষকের জন্য অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদেন স্কুলের ভর্তি করান না।’ স্কুলের টয়লেট গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহার হয়। এবিষয়ে আমি অনেকবার পদক্ষেপ গ্রহণ করার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে আমি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছি। তারাও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এবং প্রধান শিক্ষকের সাথে সমন্বয় করার চেষ্টা করেছি। কোনো বিষয়ে সমস্যা সমাধান কার সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাযহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়গুলো আমি জানলাম, সেখানে আমি যাবো এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ